উড়তে উড়তে কোন পাখি ঘুমায়?
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people's questions, and connect with other people.
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Lutful Al Numan
ফ্রিগেট বার্ড নাম সামুদ্রিক পাখির দুই পাখা মেলে ধরলে বিস্তার ছয়ফুট পর্যন্ত হয়। এরা মেঘের উপর দিয়ে সপ্তাহের পর সপ্তাহ একটানা উড়ে বেড়াতে পারে। এই উড়ন্ত অবস্থাতেই এরা ঘুমিয়ে নেয়। কীভাবে তা সম্ভব?
এই পাখিগুলো এক চোখ খোলা রেখে ঘুমায়! এই বছরের শুরুতে Max Planck Institute for Ornithology এর গবেষকগণ বেশ কিছু ফ্রিগেট বার্ডকে মস্তিষ্কের তরঙ্গ মাপার জন্য ছোট EEG ডিভাইস যুক্ত করে দিয়েছিলাম যেগুলো দূর থেকে গবেষনাগারে সংকেত প্রেরণ করত। দশটি তথ্য সংগ্রহ করে তাঁরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং তথ্য পর্যালোচনা শুরু করেন। তাঁরা লক্ষ্য করেন এই ১০ দিনে পাখিটি একটানা উড়ে ৩০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে।
এই ফলাফল বিষ্ময়কর। এখান থেকে দেখা যায় ফ্রিগেট বার্ড বাতাসেই উড়ন্ত অবস্থায় ঘুমায় এবং স্বল্প ব্যবধানে মস্তিষ্কে বিশ্রাম দেয়। মস্তিষ্কের একটি গোলার্ধ বিশ্রামরত থাকলেও অন্যগোলার্ধ তখন সক্রিয় থাকে। অন্যভাষায় বলতে গেলে, তারা উড়ন্ত অবস্থাতেই একচোখ খোলা রেখে ঘুমায়। এই চোখটি মস্তিষ্কের জাগ্রত গোলার্ধের সাথে যুক্ত। গবেষকদের মতে তারা একচোখ খোলা রাখে যেন বুঝতে পারে কোন পথে উড়ে যাচ্ছে। এর ফলে তারা একে অন্যের গায়ের উপর এসে পড়ে না।
তবে শুধু ফ্রিগেড বার্ডই যে এভাবে ঘুমায় তা নয়। ডলফিনও এই পদ্ধতিতে ঘুমায়। ডলফিনের মস্তিষ্কের বাম পাশ ঘুমালেও ডানপাশ তখন সক্রিয় থাকে এবং পরিবেশের প্রতি লক্ষ্য রাখে। আর ডানপাশের সাথে যুক্ত বামচোখ এবং তাই বামচোখ সক্রিয় থাকলে মস্তিষ্কের ডান গোলার্ধ জেগে থাকে।
আমাদের মানুষের মাঝেও এইধরনের প্রবণতা আছে। গবেষকগণ ঘুমানোর সময় আমাদের ডান ও বামপাশের সক্রিয় অংশে পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন। তবে এটি ফ্রিগেট বার্ড বা ডলফিনের মতো সম্পূর্ণ নয়। অর্থাৎ মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমের সময় কোনো একপাশ পুরোপুরি বন্ধ বা পুরোপুরি সজাগ থাকে না। বরং একধরনের অপ্রতিসাম্য দেখা যায়। এটা বিশেষ করে কারো কোনো রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে দেখা যায়। নতুন কোনো জায়গায় গেলে প্রথম রাতে ঘুম আসতে চায় না। এটাকে first night effect বলা হয়। এই রকম সময় ঘুমের মাঝে মস্তিষ্কের একটি গোলার্ধ অপেক্ষাকৃত সজাগ থেকে নতুন পরিবেশের অপরিচিত শব্দ ইত্যাদির প্রতি নজর রাখে।